শুক্রবার, ০৫ মার্চ ২০২১, ০৪:১১ অপরাহ্ন
চাটগাঁ সময়: গত ৩১ আগষ্ট সকালে জনৈকা রিনা বেগম যখন থানায় এসে তার ১১ মাস বয়সের মেয়ে চুরির অভিযোগ দেয় তখন তাকে শান্তনা দিয়ে বলেছিলাম, আমি যেভাবেই হউক আপনার সন্তানকে খুঁজে বের করে দিব। সেটা শুনেই রিনা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে আমার উপর ভরসা রেখেই থানা ত্যাগ করে।
আমি তখনও ঘোর অন্ধকারে, পরিদর্শন করলাম ঘটনাস্থল, জিজ্ঞাসাবাদ করলাম তার স্বামীসহ আশেপাশের লোকজনকে। ঘটনার সময়, লোকজনের অবস্থানসহ বিভিন্ন হিসাব নিকাশ মেলানোর চেষ্টা করতেছিলাম। কিন্তু কিছুতেই কোন ক্লু বের করতে পারছিলাম না ।
মামলা রেকর্ড করে দায়িত্ব দিলাম এস আই সুমন দে এর নিকট। সে নবীন হলেও কর্মোদমী অফিসার, তার প্রতি আস্থাও ছিল অবিচল। চলতে থাকলো তদন্ত, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তার পাশাপাশি বাদীর স্বামী মনিরকে রাখলাম ক্লোজ মনিটরিং এ। ১লা সেপ্টেম্বর সকাল বেলা ইতিপূর্বে দেওয়া কিছু গরমিলের সূত্র ধরে ডেকে আনা আনা হলো বাদীর স্বামী ড্রাইভার মনিরকে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে স্বীকার করলো তার সন্তানটি সে ঢাকায় তার আগের স্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে ।
তাৎক্ষনিক উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকের অনুমতি নিয়ে পতেঙ্গা থানা অভিযান টিম পাঠিয়ে দেওয়া হলো ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায়। ড্রাইভার মনিরের সনাক্ত মতে বাড়ী তল্লাশী করে উদ্ধার করা হলো অপহৃত ছোট্ট শিশুকে। পরের দিন ২রা সেপ্টেম্বর সকালে পতেঙ্গা থানায় হাজির করা হলো অপহৃত ভিকটিমসহ বাদীর স্বামী মনির এবং তার পূর্বের স্ত্রী রোজিনাকে । গ্রেফতার দেখিয়ে ভিকটিমের বাবা এবং সৎমাকে বিজ্ঞ আদলতে সোপর্দ করা হলে, তারা তথায় দোষস্বীকার করে স্বেচ্ছায় জবানবন্দি প্রদান করেন।
বিজ্ঞ আদালত আসামীদের জেল হাজতে প্রেরন এবং ভিকটিমকে তার মা তথা মামলার বাদীনীর জিম্মায় প্রদান করেন । মামলা তদন্তের পুরো প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার(ক্রাইম এন্ড অপারেশন) স্যারের সার্বিক দিক -নির্দেশনা, ডিসি (বন্দর) ও এডিসি (বন্দর) স্যারদ্বয়ের তদারকী, এসি (কর্নফুলী জোন ) স্যারের মামলা রুজুর সাথে সাথে ঘটনাস্থলে উপিস্থত হয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সন্ধিগ্ধ ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতঃ তাদের বিষয়ে পরামর্শ এবং উপদেশ এর জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।
কৃতজ্ঞতা জানাই এডিসি (সিটি) সিএমপি স্যারের কাছে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তার জন্য। পরিশেষে পতেঙ্গা থানা টিম তথা পরিদর্শক (তদন্ত), অপারেশন অফিসার এবং মামলার তদন্তকারী অফিসারের নিরলস পরিশ্রমকে সাধুবাদ জানাই। আমি সত্যি এই সাফল্যে তৃপ্ত কারন মামলা রুজুর ৩৪ ঘন্টার মধ্যে আমরা ভিকটিমকে তার মায়ের কোলে ফিরে দিতে পেরে।
পতেঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ উৎপল বড়ুয়া’র ওয়াল থেকে নেওয়া।
Leave a Reply